আপনি কি সরকারি চাকরিজীবী? নাকি সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন? তবে বর্তমানে আপনার মনে নতুন নবম পে স্কেল ২০২৫ নিয়েই সবচেয়ে বেশি কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। লাখ লাখ সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন: কবে আসছে নবম পে স্কেল ২০২৫, আর কতটা বাড়তে পারে বেতন?
চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক নবম পে স্কেল নিয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত খবর কী, আলোচনায় কী কী প্রস্তাব রয়েছে এবং সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাশা কী। এই লেখায় আপনি এই সংক্রান্ত সর্বশেষ এবং সঠিক তথ্য খুঁজে পাবেন।
নতুন পে স্কেল কবে কার্যকর হবে?
নবম পে স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যেই জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫ গঠন করেছে। এই কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান। বর্তমানে তার নেতৃত্বে কমিশন নতুন বেতন-ভাতা, বেতন গ্রেড, বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত কাজ করছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, জাতীয় বেতন কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদি সব প্রক্রিয়া ঠিকঠাক চলে, তাহলে নতুন বেতন কাঠামো ২০২৬ সালের মার্চ অথবা এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হতে পারে।
নবম পে স্কেলের সম্ভাব্য বৈশিষ্ট্য
নবম পে স্কেল (৯ম জাতীয় বেতন স্কেল) নিয়ে গঠিত কমিশন বর্তমানে কাজ করছে। যেহেতু এর সুপারিশ এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং সরকার কর্তৃক গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি, তাই এর বৈশিষ্ট্যগুলো সবই সম্ভাব্য ও আলোচনাধীন।
কর্মচারী সংগঠনগুলোর দাবি, মূল্যস্ফীতির প্রভাব এবং পে কমিশনের প্রাথমিক আলোচনার ভিত্তিতে নবম পে স্কেলের সম্ভাব্য যে প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো আসতে পারে, তা নিচে তুলে ধরা হলো:
বেতন ও গ্রেড কাঠামো পরিবর্তন
| বৈশিষ্ট্য | বর্তমান (৮ম পে স্কেল – ২০১৫) | নবম পে স্কেল (সম্ভাব্য আলোচনা) | মূল লক্ষ্য |
| সর্বনিম্ন মূল বেতন | ৮,২৫০ টাকা | ২৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা বা তারও বেশি (মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায়) | জীবনযাত্রার ব্যয় ও মূল্যস্ফীতির সাথে বেতনের সামঞ্জস্য আনা। |
| গ্রেড সংখ্যা হ্রাস | ২০টি গ্রেড | ১২টি বা ১৫টি গ্রেডে নামিয়ে আনা। | বেতন বৈষম্য হ্রাস করা এবং কাঠামোকে সরল করা। |
| সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত | প্রায় ১:১০ | ১:৮ থেকে ১:১০ এর মধ্যে রাখা। | গ্রেড অনুসারে বেতনের অনুপাত যৌক্তিক করা। |
যারা আওতায় আসবেন
নতুন নবম পে স্কেল ২০২৫ কার্যকর হলে এর আওতায় আসবেন বিভিন্ন খাতের বিশাল সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এদের মধ্যে প্রধানত কারা আছেন, তা নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
- সব সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী: সরাসরি সরকারের অধীনে থাকা সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
- আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান: সরকারের অংশীদারিত্ব বা নিয়ন্ত্রণে থাকা আধা-সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মীরা।
- স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা: ওয়াসা, ডেসা বা অনুরূপ স্বাধীনভাবে পরিচালিত সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
- সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী: দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীরা।
- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানার কর্মচারী: সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প কারখানায় কর্মরত কর্মীরাও এই নতুন বেতন কাঠামোর সুবিধা পাবেন।
অর্থাৎ সরকারি কোষাগার থেকে যারা বেতন বা আর্থিক সুবিধা পান, তাদের সবাই এই নতুন বেতন কাঠামোর (নবম পে স্কেল ২০২৫-এর) আওতায় চলে আসবেন।
নিয়ে নিন ফ্রিতেঃ Urban Jungle Font Download
৯ম জাতীয় বেতন স্কেল ভাতা ও সুবিধা
নবম জাতীয় বেতন স্কেলের ভাতা ও সুবিধাগুলো নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি। তবে জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫-এর আলোচনা, বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের দাবি এবং মূল্যস্ফীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভাতা ও সুবিধাগুলোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
নবম পে স্কেলে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির উপর, যা সরকারি কর্মচারীদের প্রকৃত আয় বাড়িয়ে জীবনযাত্রার মানের সাথে সামঞ্জস্য আনতে সাহায্য করবে। নিচে নবম পে স্কেলে ভাতা ও সুবিধা নিয়ে আলোচনাধীন মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:
চিকিৎসা ভাতা
আলোচনার মূল বিষয়: এটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। মূল্যস্ফীতির কারণে চিকিৎসা ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বর্তমান সুবিধা (৮ম পে স্কেল): মাসিক ১,৫০০ টাকা (কর্মকালীন ও অবসরোত্তর)।
সম্ভাব্য পরিবর্তন: কমিশন চিকিৎসা ভাতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি, অবসরোত্তর সময়ের জন্যেও এই ভাতা ও সুবিধা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অনেক সংগঠনের দাবি, পরিবারের সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে মাসিক ৭,০০০ টাকা করা হোক।
শিক্ষা ভাতা
আলোচনার মূল বিষয়: সন্তানদের পড়ালেখার খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষা ভাতার পরিমাণ যৌক্তিকভাবে বাড়ানো।
বর্তমান সুবিধা (৮ম পে স্কেল): প্রতি সন্তান ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ দুই সন্তানের জন্য ১,০০০ টাকা)।
সম্ভাব্য পরিবর্তন: সন্তানের সংখ্যা ও বর্তমান শিক্ষা ব্যয়ের সাথে সংগতি রেখে এই ভাতা অনেক গুণ বাড়ানোর সুপারিশ থাকবে। কর্মচারী সংগঠনের দাবি, এক সন্তান মাসে ৫,০০০ টাকা এবং দুই সন্তান ১০,০০০ টাকা করা হোক।
বাড়ি ভাড়া ভাতা
আলোচনার মূল বিষয়: বাড়ি ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণ এবং শহর ও গ্রামের ভাতার হারে সমতা আনা।
বর্তমান সুবিধা: স্থানভেদে মূল বেতনের ৩৫% থেকে ৬৫% পর্যন্ত দেওয়া হয়।
সম্ভাব্য পরিবর্তন: কর্মচারী সংগঠনগুলো গ্রাম ও শহর নির্বিশেষে বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ৬০% করার দাবি জানিয়েছে, যাতে কর্মচারীরা শহরে থাকার লোভ না করেন। এই হার কিছুটা বাড়ানো এবং অঞ্চলভেদে বৈষম্য কমানোর সুপারিশ আসতে পারে।
পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা
শতভাগ পেনশন পুনরুদ্ধার: ২০১৫ সালের পে স্কেলে শতভাগ পেনশন সুবিধা বিলুপ্ত করে আংশিক সুবিধা চালু করা হয়েছিল। কর্মচারী সংগঠনগুলো আবার ১০০% পেনশন সুবিধা ফেরানোর দাবি জানিয়েছে।
পেনশন বৃদ্ধি: অবসরভোগীদের মাসিক নীট পেনশন মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বৃদ্ধি করার সুপারিশ থাকবে।
উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতি
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড: যদিও ২০১৫ সালের স্কেলে এটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল, কর্মচারী সংগঠনগুলো টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বা একই ধরনের উচ্চতর গ্রেডের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জোরালো দাবি জানিয়েছে।
উচ্চতর গ্রেড: পদোন্নতি না হলে একটি নির্দিষ্ট সময় (যেমন ৫ বছর) পর উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করার দাবি আছে।
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড
সরকারি কর্মচারীদের কাছে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড অত্যন্ত আবেগ ও প্রত্যাশার বিষয়। অনেকেই চান, এই সুবিধাগুলো যেন নতুন পে স্কেলে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। তবে, এই দুটি বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বেতন বৈষম্য কমানো
বর্তমানে সবচেয়ে বড় কর্মকর্তা এবং সবচেয়ে ছোট কর্মচারীর বেতনের অনুপাত প্রায় ১০:১। তবে, নতুন বেতন কাঠামোতে এই অনুপাতটি ৮:১ থেকে ১০:১-এর মধ্যে রাখার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বেতন বৈষম্য কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা।
সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা
সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর জন্য কিন্তু আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নাম হলো Armed Forces Pay Committee 2025, যারা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে কাজ করবে।
অনলাইন জরিপ
পে কমিশন এখন সরকারি কর্মচারীদের মতামত জানতে একটি অনলাইন জরিপ শুরু করেছে। যে কেউ কমিশনের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে এই জরিপে অংশ নিতে পারবেন এবং তাদের মতামত জানাতে পারবেন।
অন্যান্য দাবি ও আলোচনাধীন সুবিধা
| ভাতার নাম | বর্তমান (৮ম পে স্কেল) | কর্মচারী সংগঠনের দাবি/ আলোচনা |
| উৎসব ভাতা | বছরে ২টি (এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ) | বছরে ২টির পরিবর্তে ৪টি মূল বেতনের সমপরিমাণ (২ বারে ২ মাসের মূল বেতন) করার দাবি। |
| নববর্ষ ভাতা | মূল বেতনের ২০% | মূল বেতনের ৫০% করার দাবি। |
| টিফিন/লাঞ্চ ভাতা | গ্রেড অনুযায়ী (খুব সামান্য) | বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সংগতি রেখে ৬,০০০ টাকা করার দাবি। |
| উচ্চতর গ্রেড/টাইম স্কেল | ১০ ও ৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড (চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত) | বিলুপ্ত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ফিরিয়ে আনা অথবা প্রতি ৫ বছর পরপর উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা। |
| পিতা-মাতার ভাতা | বিদ্যমান নেই (চিকিৎসা ভাতার সাথে অন্তর্ভুক্ত) | জীবিত পিতা-মাতার জন্য মাসিক ৫,০০০ টাকা আলাদা ভাতার দাবি। |
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
- পেনশন সুবিধা: সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে শতভাগ পেনশন সুবিধা ফেরানোর দাবি আছে।
- কার্যকরের সময়: সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কমিশন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারে এবং নতুন বেতন কাঠামো ২০২৬ সালের শুরু (জানুয়ারি/মার্চ/এপ্রিল) থেকেই কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- মহার্ঘ ভাতা (DA): নতুন পে স্কেল কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবি কর্মচারী সংগঠনগুলো করে আসছে।
গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: উপরে উল্লিখিত সব তথ্যই কমিশনের আলোচনাধীন প্রস্তাবনা বা বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের দাবি। চূড়ান্তভাবে সরকার কর্তৃক গেজেট প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এর কোনোটিই নিশ্চিত নয়।
৯ম জাতীয় বেতন স্কেল চ্যালেঞ্জ
নবম জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার কিছু বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এগুলো হলো:
১. অর্থনৈতিক চাপ
নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করতে হলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে। সবার বেতন ও ভাতা বাড়ানোর কারণে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ওপর অনেক বেশি আর্থিক চাপ সৃষ্টি হবে।
২. মুদ্রাস্ফীতি (মূল্যবৃদ্ধি)
বেতন বাড়লে বাজারে সাধারণ মানুষের হাতে টাকার প্রবাহ বাড়ে। এর ফলস্বরূপ, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যস্ফীতি বা দাম বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এতে সাধারণ মানুষ আবার আর্থিক চাপের মুখে পড়তে পারেন।
৩. সবার প্রত্যাশা পূরণ
লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারীর চাহিদা এবং প্রত্যাশা ভিন্ন ভিন্ন। তাদের মধ্যে গ্রেড এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেতন বৈষম্য কমানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই এত বিপুল সংখ্যক কর্মীর সবার প্রত্যাশা মেটানো সরকারের জন্য কঠিন হতে পারে।
লেখকের শেষ মতামত
নবম পে স্কেল ২০২৫ শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর একটি প্রক্রিয়া নয়। এটি সরকারি চাকরিজীবীদের পেশাগত মর্যাদা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠার একটি প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।